ওয়েবসাইটের ডোমেইন- হোস্টিং কি? বিস্তারিত আলোচনা।

প্রিয় পাঠক, আমরা যারা এপস/ ওয়েবসাইট নিয়ে কাজ করতে চাই,  অথবা যারা একাডেমিক   ICT বই পড়েছি, নিশ্চয়ই এতে  ডোমেইন হোস্টিং বিষয়ে কিছুটা জেনেছি। আর এবার এই পৃষ্ঠায় এর বিস্তারিত আলোচনা করব। আজকের আলোচনা গুলো হলো-

  • ওয়েবসাইট কি?
  • ডোমেইন - হোস্টিং কি?
  • www কি?
  • https:// বা http:// কি?

What is Domain,  What is Hosting,  Www full meaning,  Http full meaning


ধাপ অনুযায়ী আসি-
 ওয়েবসাইট কি? এবং 
 ওয়েবসাইট কেন তৈরি করা হয়?
ওয়েবসাইট হলো ইন্টারনেট জগতের এমন একটি জায়গা যেখানে, লেখা, ভিডিও, ছবি এবং বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করা এবং প্রদর্শন করানো হয়।  এই পৃথিবীতে ১৯২ কোটিরও বেশি  ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করতেছে।আর Google তাদের খুঁজে খুঁজে আমাদেরকে প্রদর্শন করায়।
এই ১৯২ কোটি ওয়েবসাইটের মাঝে বিভিন্ন ক্যাটাগরীর ওয়েবসাইট রয়েছে যারা বিভিন্ন  ধরনের তথ্যের সংগ্রহ করে। যেমন-
  • প্রযুক্তি বিষয়ক,
  • বিজ্ঞান বিষয়ক,
  • শিক্ষা বিষয়ক,
  • সাহিত্য সংস্কৃতি বিষয়ক,
  • সাস্থ্য বিষয়ক, 
ইত্যাদি ইত্যাদি।

আর ওয়েবসাইট তৈরির জন্য  প্রয়োজন হয় ডোমেইন এবং হোস্টিং এর।

এখব জানব,
 ডেমেইন কি? হোস্টিং কি?
ওয়েবসাইট তৈরি করতে এগুলো লাগে কেন?

  • ডোমেইনঃ
বাংলায় - ডোমেইন এর অর্থ হলো জমিদারি জায়গা বা খাস জায়গা। কিন্তু প্রযুক্তি গত ভাষায় এটির বাংলা অর্থ হলো ঠিকানা। এর কাজ হলো, একজন ওয়েবসাইটের মালিকের তথ্য গুলো বিশ্বের ওয়েব সার্ভারের সাথে যুক্ত করা এবং মালিক কে পরিচয় করানো। সহজ ভাবে বলতে গেলে-
ডোমেইন হলো ওয়েবসাইটের একটি ঠিকানা। একটি উদাহরণ সরূপ বলা যাক, 
ধরেন আপনি একজন "উদয়েন্দু" নামের মানুষ। এরকম "উদয়েন্দু" নামের হাজার হাজার মানুষ থাকতে পারে। কিন্তু এতসব মানুষের মাঝে আপনাকে কেউ চিনবে কেমন করে? আপনাকে চেনার জন্য আপনার নামের পিছনে টাইটেল বা ঠিকানা লাগাতে হবে। এর পর ই কেউ সহজে আপনাকে চিনতে পারবে।

ঠিক তেমন ই। আপনার ওয়েবসাইটের জন্যও একটি ঠিকানা তৈরি করতে হবে।যার ফলে আপনার ওয়েবসাইটের একটা পরিচয় তৈরি হবে এবং মানুষ এটাকে চিনতে পারবে।
ঠিক এই রকম। একটু চিত্র দিয়ে বুঝিয়ে দিলাম।


এক কথায় সবকিছু//
আপনার ওয়েবসাইট যদি হয় আপনার বাড়ি ! 
ডেমেইন হলো আপনার বাড়ির  ঠিকানা ! 
আর হোস্টিং হলো আপনার বাড়ির ভিটা! 

উপরের সম্পূর্ণ টি ডোমেইন, আর এর মাঝেও ভাগ রয়েছে যা আলাদা করে দেখিয়ে দিলাম। আরো কয়েকটি ভাগ রয়েছে,৷ যেমন, http://,  https://,   www.  ,  . subdomain
ইত্যাদি, এগুলো সম্পর্কে আস্তে আস্তে পরিপূর্ণ ভাবে জানব। এরজন্য অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইটের পোস্ট টি মনোযোগ দিয়ে পড়ে নিবেন।
 
ডোমেইন প্রধানত দুই প্রকারের হয়ে থাকে।
  • মেইন ডোমেইন, 
  • সাব-ডোমেইন। ভাবে ব্যবহার করা যায়।
যেমনঃ

  • ফ্রী ডোমেইন
  • পেইড ডোমেইন।
একসাথে এই চারটি বিষয় আলোচনা করা হলো-
মেইন ডোমেইন-
মেইন ডোমেইন হলো সম্পূর্ণ একটি পেইড ডোমেইন।  যা আপনার ওয়েবসাইটের লিংকে একটি সুন্দর আকৃতি দেয়। এটি Paid হয়ে থাকে। তাই এটিকে পেইড ডোমেইন ও বলা হয়।
 আপনাকে এর জন্য প্রভাইডারদের একটা মাসিক বা বাৎসরিক পে করতে হবে। তবে এর শেষে কোনো সাবডোমেইন থাকে না। শেষে শুধু- . com, . org, . edu এরকম থাকে। এর জন্য  অসংখ্য ওয়েবসাইট রয়েছে যারা ডোমেইন হোস্টিং প্রভাইড করে থাকে।



ফ্রী ডোমেইন কি?
ফ্রী- অর্থাৎ টাকা ছাড়া, বর্তমানে যারা নতুন অবস্থায় কাজ করে তারা সাধারণত ফ্রী ডোমেইন নিয়েই কাজ করে। অর্থাৎ আপনি যে ডোমেইন টি ব্যবহার করবেন তার জন্য আপনাকে কোনো প্রভাইডারকে মাসিক পেমেন্ট করতে হবে না। ফ্রী ডোমেইনের ভিতরেই মূলত একটি সাব-ডোমেইন থাকে, কারণ আপনি এটা ফ্রী ব্যবহার করছেন তাই ঐ প্রভাইডারদের ক্রেডিট আপনার ডোমেইনের ভিতর থাকে। যেমনঃ
bongo.orga.com
উপরে আপনি তিনটি অংশ দেখতে পারছেন। এর মাঝে . org  হলো সাব ডোমেইন, যা মেইন ডোমেইন নামের পিছনে থাকে। আপনারা এরকম অসংখ্য ফ্রী ডোমেইন পেয়ে যাবেন। অনেক প্রভাইডর রয়েছে যারা ফ্রীতে ডোমেইন হোস্টিং সার্ভিস দিয়ে থাকে। 



  • হোস্টিং কি?
হোস্টিং কেন ব্যবহার করতে হয়?
দেখুন _ আপনার কাছে যদি টাকার কেবল একটি নোট হয় তাহলে এটি আপনি পকেটে রাখবেন। কিন্তু আপনার কাছে যদি অসংখ্য এরকম নোট হয় তাহলে - এগুলো  সংরক্ষণ করে রাখার জন্য  অবশ্যই কোনো উপযুক্ত জায়গা খুঁজ বেন? বা থলে অথবা ব্যাগ খুঁজবেন?
ঠিক এরকম ই, আপনাকে আপনার তথ্য গুলো রাখার জন্য আপনার একটি উপযুক্ত জায়গা বা স্পেস লাগবে। আর এটিই হলো মূলত হোস্টিং। নিচের ফটোটি দেখুন_

Hosting hub


যারা হোস্টিং সার্ভিস দিয়ে থাকে তাদের নিকট এরকম অসংখ্য বড় বড় মেমোরি থাকে। যেখানে সবার তথ্য সমূহ জমা থাকে। এটি সব সবসময় এক্টিভ থাকে। কখনো বিদ্যুৎ অফ হয় না। একবারেী জন্য অফ হয়ে গেয়ে সমস্ত ওয়েবসাইট বন্ধ হয়ে যাবে।
আপনি ডোমেইনের মতোই অসংখ্য ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন যেগুলো আপনার ওয়েবসাইট রাখার জন্য হোস্টিং দেবে। এটাও ফ্রী এবং পেইড দু রকম নেয়া যায়।



  • WWW কি?
আপনি যদি যেকোনো একাডেমি বইয়ের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বইটি পড়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই www সম্পর্কে জেনেছেন। হ্যা। এবার এটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করি। 

www কি এবং এটি কেন ব্যবহার করা হয়?
এই প্রশ্ন টি করার সাথে সাথে আপনি নিশ্চই বলে দিবেন,  www হলো- World  Wide Web.

কিন্তু কেউ কি এটার পরিপূর্ণ উৎপত্তি স্থল জানি?

আসলে, এটি ওয়েব নামেও পরিচিত। কোন URL লিংকের এর আগে যখন ".www " থাকে সেটি দ্বারা ওয়েবসাইটকে নির্দেশ করে। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব হলো একটি স্টোরেজ সিস্টেম, যেখানে পুরো বিশ্বের ওয়েবসাইট গুলো সংরক্ষিত  থাকে।

আবিষ্কার-

মূলত ১৯৯০ সালে বিজ্ঞানী টিম বার্নার্স-লি  সাইনটিস্টদের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করার জন্য  (.www) আবিষ্কার করেন। যখন তিনি CERN এ কর্মরত ছিলেন তখন  কমিউনিটি CERN   ছিলো ১০০ টি দেশ থেকে প্রায় ১৭০০ জন সাইনটিস্টদের একটি গভেষণা কেন্দ্র। 

 তবে, ১৯৯১ সালের  ২৩ আগস্ট এটি সবার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়।

আর এর পর থেকে-

আমাদের অনেকেরই ধারণা হতে থাকে ওয়েব আর ইন্টারনেট একই জিনিস। আসলে,দুটি এক না।  আবার একই।

 যদিও ইন্টারনেট এবং ওয়েব একে অপরের সাথে সংযুক্ত!

ইন্টারনেট হলো সারাবিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বিশাল কম্পিউটার নেটওয়ার্ক যার মাধ্যমে আমরা ডাটা আদান প্রদান করে থাকি।

 অন্যদিকে,

ওয়েব হলো কোন ইন্টারনেটের কোনো সার্ভারে থাকা  একটি  মিনি-সার্ভার, যা  বিভিন্ন ছোট ছোট  ওয়েব পেজের সমষ্টি, যা আমরা ইন্টারনেটের মাধ্যমে এক্সসেস করে থাকি।

আর এই Web এর সাথে সংযুক্ত ওয়েবসাইট গুলোর সামনেই আমরা " . www" দেখতে পাই।


  • http কি?

http হলো তথ্য আদান প্রদান করার একটি প্রটোকল।  এর পূর্ণরূপ হলো Hyper Text Transfer Protocol। যেকোন ব্রাউজার থেকে যে কোন ওয়েবসাইটে ভিজিট করলেই  ঐ ওয়েব সাইটের ডোমেন নামের সামনে এখন http অটোমেটিক সংযুক্ত  হয়ে যায়।

এটি ওয়েবসাইটের লিংকের কোন অংশ নয়। তবে এটি কোনো লিংক কে নির্দেশ করে। যার ফলে ব্রাউজার বুঝতে পারে আপনি কোনে ওয়েবসাইট খুঁজছেন।

কাউকে লিংকের দেয়ার সময় আপনি  লিংকে http ব্যবহার  না করলে ব্রাউজার আপনার লিংক কে রিডিরেক্ট করবে না।

লিংকের মেইন অংশ হলো তার ডোমেইন নেম।

কোন ওয়েবসাইট ভিজিট করার জন্য আমরা যখন ব্রাউজারে ডোমেইন লিখে সার্চ করি এবং তারপর ওয়েবসাইটের যা যা তথ্য দেখতে পাই তা সবই Hyper Text. সাধারণত সার্ভারে থাকা ওয়েবসাইটের সকল ডাটা আমরা কোন না কোন ব্রাউজের মাধ্যমে দেখে থাকি, আর এই ডাটা দেখানোর জন্য সার্ভার থেকে ডাটাকে ট্রান্সফার হয়ে ব্রাউজারে আসতে হয়। এই যে সার্ভার থেকে ডাটা ব্রাউজারে আসে এটারও একটা নিয়ম আছে যাকে বলা হয়  Protocol

ওয়েবসাইটের ডাটা সার্ভার থেকে ব্রাউজারে আসা এবং ব্রাউজার থেকে কোন ওয়েবসাইটের ডাটা দেখার রিকোয়েস্ট পাঠানোর এই কাজটিই মূলত http এর মাধ্যমে হয়ে থাকে

___________________

প্রিয় পাঠক,  এরকম আরো প্রযুক্তি সম্পর্কিত তথ্য পড়তে অবশ্যই এই ওয়েবসাইটটিকে সেভ করে রাখবেন।

ধন্যবাদ!

Post a Comment

0 Comments