ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে নাগরিক সেবা ও ই-কমার্স সম্পর্কিত সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করতে পারা। অষ্টম শ্রেণির ডিজিটাল প্রযুক্তি বই।
উত্তরঃ
বর্তমান যুগ ডিজিটাল যুগ। ডিজিটাল যুগে এসে আমরা ঘরে বসেই বিভিন্ন ধরনের নাগরিক সেবা ও ই-কমার্স সম্পর্কিত সেবা গ্রহণ করতে পারি।
নাগরিক সেবা ও ই-কমার্স সম্পর্কিত যে সুবিধা গুলো গ্রহণ করতে পারি তা নিচে আলোচনাকরা হলোঃ-
ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে নাগরিক সেবা গ্রহণঃ
১) জাতীয় পরিচয়পত্র গ্রহণঃ
বর্তমান যুগ এতটাই এগিয়ে গিয়েছে যে এখন চাইলেই আমরা ঘরে বসেই আমাদের নিজের জাতীয় পরিচয় পত্র বা NID কার্ড তৈরির জন্য আবেদন করতে পারি। আগে আমরা NID কার্ড পাওয়ার জন্য অনেক পরিশ্রম করে নির্বাচন অফিসে গিয়ে আইডিকার্ড প্রস্তুতের জন্য আবেদন করতাম যার ফলে অনেক সময় ব্যয় হতো। কিন্তু এখন ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে আমরা আমাদের NID কার্ড খুব সজহেই গ্রহণ করতে পারি।
নিচে একটি উদাহরণ তুলে ধরা হলোঃ
জাতীয় পরিচয় পত্র পাওয়ার জন্য ডিজিটাল মাধ্যমে সুবিধা গ্রহণঃ
" মিস্টার উদয় " জাতীয় পরিচয়পত্র পাওয়ার জন্য এবছর যোগ্য হয়েছে, তাই এবছর তার বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ ও ছবি তোলার জন্য তাকে নির্ধারিত কেন্দ্রে যেতে বলা হলো। তার ছবি তোলার পর একটি ফর্মে সে সব তথ্য লিখে জমা দিয়ে এলো। কিছুদিন পর তার বাবার মোবাইল নম্বরে মেসেজ এলো যে তার জাতীয় পরিচিতি নম্বর সম্পন্ন হয়েছে এবং নির্দিষ্ট সময় পর তাকে পরিচয়পত্র সংগ্রহ করতে হবে, এবং অনলাইনে একাউন্ট নিবন্ধন করে সে এখনই ডাউনলোড করতে পারবে। বাবার সহায়তায় জাতীয় পরিচয়পত্রের ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করে নিজের ছবিসহ তার পরিচয়পত্রটি দেখতে পেয়ে সে আনন্দে আত্মহারা! সে নিজের ছবিসহ তার পরিচয়পত্রটি দেখতে পাচ্ছে।
সেটা সে ডাউনলোডও করে ফেলল। এভাবে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে খুব সহজেই সে নিজের NID কার্ডের সেবাটি গ্রহণ করল।
২) জাতীয় পরিচয় পত্রের ভুল সংশোধনে ডিজিটাল মাধ্যমে সুবিধা গ্রহণঃ
পরক্ষণেই একটা ভুল চোখে পড়ায় তার মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল। বাবার নামের বানানে ভুল দেখা যাচ্ছে। কিন্তু সে তো তথ্য ফর্মে সব তথ্য ঠিকই দিয়েছিল, তাহলে কি যারা তথ্য টাইপ করেছিলেন তারাই ভুল করলেন? পরের দিন সে নির্বাচন অফিসের তথ্যসেবা কেন্দ্রে গিয়ে জানতে পারলো যে এটার সংশোধন ওয়েবসাইটে তার একাউন্টে গিয়েই সম্ভব। কিন্তু এই সেবাটা পেতে গেলে মোবাইল বা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে সার্ভিস চার্জ দিতে হবে। পরের দিন সে ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দেশনা অনুযায়ী ভুল সংশোধনের আবেদন করে।
এজন্য আবেদনের সাথে কিছু প্রমাণও দাখিল করতে হয়। কিছুদিনের মাঝে মেসেজের মাধ্যমে জানতে পারল যে তার সংশোধনের আবেদন উপযুক্ত বিবেচিত হওয়ায় অনুমোদিত হয়েছে। ওয়েবসাইটেও তার সংশোধিত পরিচয়পত্রটি পাওয়া গেল। সে এখন ভীষণ খুশি! পরে সে তারিখ অনুযায়ী তার আইডি কার্ড হাতে পেল।
এভাবে আমরা ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে আরো অনেক ধরনের নাগরিক সেবা ও সুবিধা নিতে পারি। যেমনঃ
নাগরিক ভাতা, নাগরিক বিল, বয়স্কভাতা ইত্যাদি- ইত্যাদি।
ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ই-কমার্স সম্পর্কিত সুবিধ গ্রহণঃ
ইলেক্ট্রনিক নেটওয়ার্ক, বিশেষ করে, ইন্টারেনট ব্যবহার করে পণ্য ক্রয়-বিক্রয়, অর্থ লেনদেন ও ডাটা আদান-প্রদানই হচ্ছে ই-কমার্স বা ই-বাণিজ্য।
এখন চাইলে ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে ঘরে বসেই আমরা পণ্য ক্রয় বিক্রয় করতে পারি।
ই-কমার্স সম্পর্কিত যে যে সুবিধা নিতে পারি তা তুলে ধরা হলোঃ-
সম্ভাবনাময় এই ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পেয়েছে অসাধারণ সুযোগ সুবিধা প্রদানের মাধ্যমে। গ্রাহকদের কেনাকাটার মান-উন্নয়ন এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো ডিজিটালাইজেশন এর মাধ্যমে অনেক সুযোগ-সুবিধা গ্রহণ করতে পারছে।
যেমনঃ
- ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো এখন খুব সহজেই তাদের নির্দিষ্ট গ্রাহকদের কাছে পৌছাতে পেরেছে। লোকাল বিজনেস থেকে শুরু করে গ্লোবাল বিজনেস এর ক্ষেত্রেও এই ই-কমার্স সিস্টেম বেশ সহজতর করে দিয়েছে।
- গ্রাহকরা এখন ঘরে বসেই তাদের কাঙ্ক্ষিত পণ্য ক্রয় করতে পারছে।
- কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই তাদের সেই ক্রয়কৃত পণ্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই ঘরে পৌছে দেয়।
- ব্যবসা পরিচালনার খরচ আগের চেয়ে অনেক কমিয়ে দিয়েছে।
- অনলাইন মিডিয়ার কল্যাণে এখন একটি ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমেই গ্রাহকদের চাহিদা অনুযায়ী কেনাকাটার অভিজ্ঞতা তরান্বিত করা সম্ভব হয়েছে।
- এবং ই-কমার্স এর মাধ্যমে মার্কেটিং খরচ অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব।
লেখকঃ উদয়েন্দু দাস
0 Comments
আপনার মন্তব্য লিখুন!